আই ওয়ান টিভি ডেস্ক
গাজায় একদিকে দুর্ভিক্ষ, অন্যদিকে ইসরাইলের হামলা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে গাজা অভিমুখে একটি ত্রাণবাহী নৌকা। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন জলবায়ু আন্দোলনের পরিচিত মুখ গ্রেটা থুনবার্গসহ আরও অনেকেই। কিন্তু নৌকাটিকে ভিড়তে দিতে চায় না ইসরাইল। নৌকাটিতে হামলার হুমকি দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) নামে একটি দাতব্য সংস্থার তত্ত্বাবধানে গত রোববার ইতালির একটি বন্দর থেকে ‘ম্যাডলিন’ নামের একটি নৌকায় ত্রাণ নিয়ে গাজার উদ্দেশে রওনা করেন ২২ বছর বয়সি সুইডিশ তরুণী গ্রেটা থুনবার্গ। তার সঙ্গে রয়েছেন গেম অব থ্রোন খ্যাত অভিনেতা লিয়াম কানিংহামসহ আরও বেশ কয়েকজন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব।
তাদের লক্ষ্য, ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো। গাজায় গত ৯০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলি অবরোধ চলছে। থুনবার্গদের জাহাজে দুধ, প্রোটিন বার, শিশুখাদ্য, ডায়াপার, ময়দা, চাল, পানির ফিল্টার, স্বাস্থ্যবিধি পণ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে।
তবে এই সমুদ্রযাত্রায় তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দক্ষিণ ইতালির কাতানিয়া থেকে আসার পথে নৌকার কর্মীরা জানান, তাদের নৌকাটিকে ড্রোন দিয়ে অনুসরণ করা হচ্ছে। যা গ্রিক কোস্ট গার্ড পরিচালনা করছিল বলে তাদের বিশ্বস। এমন অবস্থায় তারা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
এবার সরাসরি ইসরাইল হুমকি দিয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন বলেছেন, ‘আমরা এ বিষয়টিও মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে এবং আমরা সেই মতোই পদক্ষেপ নেব।’ যদিও কি পদক্ষেপ নেয়া হবে তা তিনি বিস্তারিত বলেননি।
তবে নিজের মন্তব্যে তিনি ২০১০ সালের ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা’ অভিযানের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন, যেখানে তুরস্কের একটি সহায়তাবাহী জাহাজে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে হত্যা করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী।
গ্রেটা থুনবার্গ তাদের সমুদ্রযাত্রার বিভিন্ন ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন। তিনি বলেছেন, তারা এই যাত্রার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন। তিনি মনে করেন, চেষ্টাই মানবতার একমাত্র ভরসা। তার কথায়, আমরা জানি, পরিস্থিতি খুবই কঠিন। কিন্তু চেষ্টা না করলে মানবতা রক্ষা করা সম্ভব নয়।
এদিকে গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। ঈদের প্রাক্কালেও উপত্যকাজুড়ে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর চলছে গোলাবর্ষণ। তাতে দীর্ঘ হচ্ছে হতাহতের তালিকা। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ২৩ জন নিহত হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৬০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪১ জন।